মোঃজুয়েল মিয়া,আখাউড়া প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় সরকারি খাল ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে ভূমি দস্যুদের বিরুদ্ধে।
জানা যায়, উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের নূরপুর গ্রামে সরকারি খাল দখল করে স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। দীর্ঘ দিন থেকে গ্রামের এ খালটি ভরাট করে দখল করার পায়তারা করছে। এ বিষয়ে ২০০৪ থেকে ২০০৭ সন পর্যন্ত বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলেও সরকারিভাবে দখল মূক্ত করার কোন উদ্যোগ দেখেনি এলাকাবাসী।
অভিযুক্তরা হলেন ধরখার ইউনিয়নের নূরপুর গ্রামের হরমুজ আলী, শুক্কুর আলী, ফরিদ মিয়া, শামসু মিয়া(১), শামসু মিয়া(২), ইউনুছ মিয়া, নান্নু মিয়া, হোসেন মিয়া, আইনুল হক। এ বিষয়ে অভিযুক্তদের সাথে কথা বলতে গেলে তাদের কাউকে পাওয়া যায় নি।
সম্প্রতি তাদের বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে চলা সরকারি খালে স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, ধরখার ইউনিয়নসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকার গুরুত্বপূর্ণ এই খাল। বিভিন্ন এলাকার পানি নিষ্কাশন ও কৃষি অর্থনীতিতে এই খালটির অবদান অনেক। গ্রামের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে তিতাস নদীতে সংযুক্ত হয়েছে এই খালটি। কয়েক কিলোমিটার এলাকার বিভিন্ন স্থানে স্থানীয়দের মাধ্যমে সরু হয়ে আসলেও সবশেষ খালের শেষ অংশ বাঁধাগ্রস্থ করেছে উল্লেখিত স্থানীয় প্রভাবশালীরা। নিজের বাড়ির সংলগ্ন সড়কের পাশে এই খালে স্থায়ী স্থাপনা গড়ে তুলেছেন। বর্তমানে খালটি অস্তিত্ব সংকটের সম্মুখীন হয়েছে।
ধরখার ইউনিয়নের নূরপুর গ্রামের নাম প্রকাশ না করা শর্তে একাধিক ব্যক্তি জানান, এই খালটি এলাকার প্রাণ। এ খাল ভরাট করার কারণে আমরা জমিতে কৃষি কাজ করতে পারছি না। সরিষা চাষ করতে পারছি না। অনেক বছর ধরেই এ খালটি জবর দখল করার পায়তারা চলছে স্থানীয় মাতব্বররা।
ওয়ার্ড মেম্বার মো. আমিনুল ইসলাম জানান, আমাদের এ খালটি দিয়ে এক সময় নৌকা চলাচল করতো, বর্তমানে খালটি দখল হওয়ার কারণে পানি নিষ্কাশন বন্ধ থাকায় এলাকার কৃষকরা জমিতে চাষবাস করতে পারছে না। কৃষি প্রধান এলাকা হওয়ায় কৃষি অর্থনীতি মূলত পরিচালিত হয় এই খালকে ঘিরেই। কয়েক দশক ধরেই খালটি নানাভাবে বাঁধাগ্রস্ত হয়ে সরু হয়ে পড়েছে। স্থাপনা নির্মাণে এলাবাসী বাঁধা তৈরি করলেও কোন কাজ হয়নি। সরকারি সম্পত্তি এই খাল ব্যবহারের অধিকার রয়েছে সবার। ব্যক্তি স্বার্থে খালটি দখল করে স্থায়ীভাবে স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে এটা যেন তাদের নিজের সম্পত্তি। বিষয়টি প্রশাসনের কঠোরভাবে দেখা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। সরকার যদি এ মুহুর্তে খালটি পুনরুদ্ধার না করে তাহলে খালটি তার নিজস্ব অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলবে। প্রাকৃতিক এই সম্পদ রক্ষার্থে সবার এগিয়ে আসা প্রয়োজন। তবে এখন পর্যন্ত সরকারি কর্তৃপক্ষ কোন ধরনের পদক্ষেপ নেননি।
পানি উন্নয়নের বোর্ডের কর্মকর্তা জানান, সরকারি খালের সীমানার ভেতর স্থাপনা নির্মানের কোন ধরনের কোন সুযোগ নেই। আমরা সরেজমিনে গিয়ে তার ব্যবস্থা নিব।