জুয়েল মিয়া,ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় ভূমি-গৃহহীনদের জন্য ঘর নির্মাণ কাজে নিম্ন মানের সামগ্রী ব্যবহার করায় কাজ বন্ধ করে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোমানা আক্তার গত শুক্রবার (৯ জুলাই) বিকালে উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রামে প্রকল্প পরিদর্শনে গিয়ে অনিয়ম ও নিম্ন মানের সামগ্রী দিয়ে ঘর নির্মাণ করায় নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় সারাদেশের ন্যায় আখাউড়া উপজেলায় ৬৫১ জন গৃহহীন ও ভূমিহীনকে আধা পাকা ঘর করে দিচ্ছে সরকার। ২ শতক জায়গায় নির্মিত এসব ঘরে ২টি কক্ষ, ১টি বাড়ান্দা, রান্নাঘর ও বাথরুম রয়েছে। একটি ঘরের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা। কাজগুলো ঠিকাদারের মাধ্যমে না করে উপজেলা প্রশাসন করছে।
এরই অংশ হিসেবে আখাউড়া উত্তর ইউনিয়নে ২৯টি ঘর নির্মাণ করা হবে। বর্তমানে চানপুর লালমাটিয়া এলাকায় ৬টি ঘর নির্মাণের কাজ চলছে। আজমপুর গ্রামের পৃথক দুটি স্থানে অপর একটি স্থানে মাটি ভরাটের কাজ চলছে। উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চারজন সদস্য এসব ঘর নির্মাণ কাজ করছেন। তারা হলেন মো: কুতুব উদ্দিন, মো: সাত্তার মিয়া, কাজী মো: ইউসুফ, মো: আবুল কাসেম ভূইয়া।
সরজমিনে গত শুক্রবার (৯ জুলাই) বিকালে আখাউড়া উত্তর ইউনিয়নের গৃহনির্মাণ প্রকল্পের চানপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায় নির্মাণ শ্রমিকরা কাজ করছে। এসময় গৃহ নির্মাণের জন্য রাখা ইট ও সুরকিগুলোর মান খারাপ দেখা যায়। বালিতে মাটি মেশানো। মসলায় বালির পরিমাণ বেশি দেখা যায়। ঘরের দরজা ও জানালার শিট খুবই পাতলা, টিনের চালার কাঠগুলো খুবই চিকন। তাছাড়া প্রকল্পে মাটি ভরাট ও দেওয়াল নির্মাণের জন্য আলাদা ৪ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও ঠিকভাবে মাটি ভরাট করা হয়নি।
আখাউড়া উত্তর ইউনিয়নের সদস্য ও মাটি ভরাট কাজের সভাপতি সালমা আক্তার বলেন, আমি কুতুব মেম্বারকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম মাটি ভরাট করার জন্য। কতটুকু মাটি ভরাট করেছে তা আমি বলতে পারব না।
আখাউড়া উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান ভূইয়া স্বপন নির্মাণ কাজে কিছু নিম্ন মানের ইট আনা হয়েছিল স্বীকার করে বলেন, সেগুলো সরিয়ে নেয়া হয়েছে। আমি জুন মাসের ক্লোজিং এবং ব্যক্তিগত কাজে ঢাকায় ব্যস্ত ছিলাম। আপনারা অফিসে আসেন বিস্তারিত জানতে পারবেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন কমটির সদস্য সচিব তাপস চক্রবর্তী বলেন, চানপুর,লালমাটিয়া ও আজমপুরের দুটি স্থানে মাটি ভরাট ও দেয়াল নির্মাণের জন্য ৪ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ঠিকমত মাটি ভরাট হয়েছে কিনা দেখা হবে। আর নিম্নমানের কিছু ইট এনেছিল সেগুলো পরিবর্তন করে ভালো ইট দিয়ে কাজ করতে বলেছি।
এ ব্যপারে আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোমানা আক্তার বলেন, ঘর নির্মাণ কাজে নিম্ন মানের ইট ব্যবহার করায় কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। পরবর্তীতে ভালো ইট দিয়ে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ঘর নির্মাণে অন্য কোন অনিয়ম হলে ঘর বুঝে নেওয়ার সময় তা দেখা হবে ।