আখাউড়ায় প্রভাবশালীদের দখলে পুরো খাল,ব্রিজ যেন নীরব সাক্ষী

মোঃজুয়েল মিয়া,আখাউড়া প্রতিনিধিঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার ধরখার ইউনিয়নের তিতাসের তীর ঘেরা বনগজ গ্রাম।গ্রামে হাজারো মানুষের বসবাস।একটিমাত্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে প্রায় সারা বছর জলাবদ্ধতা লেগেই থাকে।গ্রামটির বাড়ির উঠোনে, রাস্তার মাঝখানে ও ঘরের ঠিক পিছনে বানানো হয়েছে সেতু।সেতু তিনটার সুফল পাচ্ছে না গ্রামবাসীরা।বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতে বাড়িঘর ও রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে যায়।এসকল সেতু চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে গ্রামবাসীর মধ্যে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ব্রিজের উপর খড়ের বসতি ।২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৫০ ফিট দীর্ঘ ব্রিজ টি নির্মাণ করা হয়।কর্তৃপক্ষ ব্রিজ নির্মাণ করেই যেন খালাস। নির্মিত এই ব্রিজের সংযোগ সড়ক না করেই টাকা তুলে নিয়েছেন ঠিকাদার। আর ঠিকাদারের এসব অনৈতিক কাজে সহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে খোদ প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।মাত্র ৬ বছরের ব্যবধানেই ২২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত ব্রিজটিসহ পুরো খালটি প্রভাবশালীরা দখলে করে নিয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়,‘তিতাস কালিতলা পশ্চিম কবরস্থান থেকে কাদির মিয়ার বাড়ি পর্যন্ত একটি খাল ছিলো।সময়ের ব্যবধানে খালের কোনো চিহ্ন এখন খুঁজে পাওয়া না গেলেও ব্রিজগুলোই যেন জীবন্ত স্বাক্ষী হিসেবে দাড়িয়ে বলতেছে এখানে খাল ছিল।ব্রিজগুলোর সংযোগ সড়ক তৈরি না করে উল্টো তাদেরকে হুমকি দিয়েছে। এ অনিয়মের কথা কাউকে জানানো হলে মামলা দেয়া হবে বলে হুমকি ও দেয়া হয়।’

স্থানীয় অবসরপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর ওয়ারেন্ট অফিসার মোশারফ হোসেন জানান,‘আমি ছোটবেলায় বনগজ খালের মধ্যে নৌকা চলাচল করতে দেখেছি। একদিক দিয়ে নৌকা প্রবেশ করেছে অন্যদিক দিয়ে নৌকা বের হয়েছে। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে খালের উভয় পাশের বাসিন্দারা যার যার বাড়ি বরাবর দখল করে নিয়েছে।ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে অথচ এই ব্রিজের সংযোগ সড়ক করা হয়নি। কাজ সম্পন্ন না করেই ঠিকাদার উদাও হয়ে গেছে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানায়,‘তখন আমরা আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ জানিয়েছিলাম।তিনি স্থান পরিদর্শন করেছে ঠিকই কিন্তু অদৃশ্য কারনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।’

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের অর্থায়নে নির্মাণ করা উক্ত সেতুর অন্তরালে সীমাহীন দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিযোগের বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি আখাউড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তাপস দাস। তিনি বলেন,‘এ ব্যাপারে আমি বলতে পারব না। এখন চলে ২০২০-২০২১ অর্থবছর। অনেক আগের কাজ তাই কিছু বলতে পারব না।’

এ বিষয়ে আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুর-এ- আলম জানান,‘খালের উপর ঘরবাড়ি সহ ভরাট হওয়ার বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। যারা অবৈধভাবে দখল করে আছে তাদের তালিকা করে উচ্ছেদের ব্যবস্থা নিবো। খালটি সরকারিভাবে খনন করে নাব্যতা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করবো।’দখলকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে ও আশ্বাস দেন তিনি।

মন্তব্য করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে