মোঃজুয়েল মিয়া,আখাউড়া প্রতিনিধি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় অটোরিকশা ভাড়া সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষ আতিকুর ভূঁইয়ার ধাক্কায় জামাল ভূঁইয়া (৭০) নামে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে তার পরিবারের লোকজন।
গত ১১ নভেম্বর সকালে উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের নিলাখাদ পূর্ব পাড়া ব্রিজের উপর এ ঘটনা ঘটে।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানান,আতিকুর অনেক প্রভাবশালী লোক।তার ভয়ে এলাকার নিরীহ মানুষ সব সময় আতংকে থাকে।জামাল ভূঁইয়া অনেক ভাল মানুষ ছিলেন।অটোরিকশার ভাড়া চাওয়ায় জামাল ভূঁইয়ার ছেলে মঈনকে বেধড়ক পিটায় আতিকুর।খবর পেয়ে ছেলেকে বাঁচাতে বৃদ্ধ জামাল ভূঁইয়া ঘটনাস্থলে গেলে তাকেও ছাড় দেয়নি আতিকুর।অসহায় পরিবারটি যেন উক্ত নেক্কারজনক হত্যার ন্যায় বিচার পায়।
নিহত বৃদ্ধের ছেলে মো. মঈন উদ্দিন ভূঁইয়া জানান, আমি একজন অটো রিকশা চালক।আমার অটোরিকশা দিয়ে চলাচল করত আওলাদ হোসেন ভূঁইয়ার ছেলে আতিকুর ভূঁইয়া।সারাদিন আমার অটোরিকশা দিয়ে ঘুরাঘুরি করার পর কোনো ভাড়া দেয়না।অটোরিকশাটি চালিয়ে পরিবারের ভরণপোষণ করতে হয়।বেশ কিছুদিন এভাবে চলার পর তার কাছে ভাড়ার টাকা দাবি করায় লাঠি দিয়ে আমাকে মারধর করে।আমাকে মারধরের খবর পেয়ে আমার হৃদরোগে আক্রান্ত বাবা জামাল ভূঁইয়া ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে তাকে ঘুষি মেরে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় আতিকুর।বাবার পরিস্থিতি খারাপ দেখে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি। সেখানে থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সদর হাসপাতালে দুইদিন চিকিৎসা করার পর অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরিশেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে গত ২৬ নভেম্বর রোজ বৃহস্পতিবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় আমার বাবা মৃত্যু বরন করেন। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির প্রদানের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য ও মাননীয় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক তথা সরকারের কাছে জোর দাবি জানান নিহতের পরিবারের লোকজন।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করতে সরেজমিনে গেলে আতিকুর ভূঁইয়াকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। তার স্ত্রী জানান, তার সাথে কারো কোন যোগাযোগ নেই । তার মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে।জামাল ভূঁইয়ার সাথে আমার স্বামীর কোনো বিরোধ নেই। তাকে ধাক্কা এবং ঘুষি দেয়ার বিষয়টি মিথ্যা। তিনি ঘটনাস্থলে যাওয়ার পথে রাস্তায় অসুস্থ হয়ে পড়েন।
আখাউড়া থানার ওসি তদন্ত মাসুদ উল আলম জানান কয়েকদিন আগে মারামারি হয়েছিল। এ বিষয়ে একটি মামলা হয়েছে। তবে নতুন করে কোনো মামলা করা হয়নি। আসামিরা এখন জামিনে রয়েছেন। জামাল ভূইয়ার মৃত্যুর পর তার ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। তদন্তের রিপোর্ট আঘাত জনিত হলে কোর্ট কে জানানো হবে।