মোঃজুয়েল মিয়াঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় জায়গা নিয়ে বিরোধের জের ধরে শিউলী আক্তার(৩০) নামে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেছে তার আপন ভাইয়ের স্ত্রী লাকি বেগম(৩২) ও তার ভাইয়ের শ্বশুর বাড়ির লোকজন।
আহত শিউলী আক্তার আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের শোন লৌহঘর গ্রামের সৌদিআরব প্রবাসী মকবুল হোসেনের স্ত্রী। এ ঘটনায় আহতের বড় বোন সামসুন্নেহার বেগম(৩৫) বাদী হয়ে আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন।
আহত শিউলী আক্তারের আপন বড় ভাই প্রবাসী আব্দুল্লাহর স্ত্রী লাকি বেগম(৩২) তার বাবা, মা, ভাই ও বোনদের নিয়ে মারধর করে। মারধরকারীরা হলেন লাকি বেগমের বাবা একই গ্রামের মৃত চাঁন মিয়ার ছেলে মোঃহেলাল উদ্দিন(৬০), হেলাল উদ্দিনের ছেলে মোঃ সাগর মিয়া(১৮), সাকিল মিয়া(২০), হেলাল উদ্দিনের মেয়ে লাকি বেগম(৩২), কলি বেগম(২৪), মুন্নি বেগম(২২) ও হেলাল উদ্দিনের ত্রী মিসেস হেলাল উদ্দিন(৫০)।
এ বিষয়ে স্থানীয় ও অভিযোগের সূত্র থেকে জানা যায়,গত রবিবার(৭জুন) সকাল আনুমানিক ৬ টার সময় শিউলী আক্তারের বড় ভাইয়ের স্ত্রী লাকি তার মা, বাবা, ভাই ও বোনদের নিয়ে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করে।শিউলী আক্তারের বসতভিটার পশ্চিম পাশেই তার ভাই আব্দুল্লাহর বাড়ি এবং পূর্ব পাশে একটি পুকুর।জায়গাটি একটু নির্জন এলাকা হওয়ায় তারা সকলে সকাল ছয়টার সময় শিউলী আক্তারকে ডেকে ঘুম থেকে উঠায়। ঘুম থেকে উঠে দরজা খোলার সাথে সাথে কিছু বুঝে উঠার আগেই ছয় সাত জন মিলে টেনে হিচড়ে শিউলী আক্তারকে বাড়ির পূর্ব পাশের পুকুরের উত্তর পশ্চিম কোনায় নিয়ে যায়। সেখানে একজন গলায় কাপড় পেঁচিয়ে ধরে রাখে আর বাঁকিরা সবাই লাঠি দিয়ে তার মাথা, হাত, পিঠ, পা ও কোমড়ের বিভিন্ন যায়গায় এলোপাথাড়িভাবে সজোরে আঘাত করে। শিউলি আক্তারকে গলায় কাপড় পেঁছিয়ে সবাই ইচ্ছামতো মারধর করে অজ্ঞান করে ফেলে। মারধরের পর শিউলি আক্তারকে মৃত মনে করে পুকুরের পাশে ফেলে দিয়ে চলে যায় তারা।
শিউলীর পাঁচ বছরের মেয়ের চিৎকার শুনে পাশের বাড়ির থেকে শিউলি আক্তারের চাচা হারুন মিয়া সহ আশেপাশের লোকজন ছুটে এসে শিউলীকে গুরুতর আহত ও রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে আখাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। অসহায় একটি মেয়ের উপর এমন নেক্কারজনক হামলার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়েছে স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে আহত শিউলী আক্তারের বড় বোন সামসুন্নেহার বলেন,আমার আপন ভাই আব্দুলাহ এখন প্রবাসে আছে।আমার ভাইয়ের বউ লাকি ও তার বাবার বাড়ির লোকজন জোরজবরদস্তি করে শিউলী আক্তারের ক্রয়কৃত বাড়ির জায়গাটা দখল করতে চাচ্ছে। যেহেতু শিউলীর বাড়ির দুই পাশে আব্দুলাহর জায়গা তাই তারা চাচ্ছে মারধর, ভয়ভীতি ও হুমকি দিলে শিউলী আক্তার জায়গাটি ছেড়ে চলে যাবে। ফলে পুরো যায়গাটির মালিক প্রবাসী আব্দুল্লাহ ও তার স্ত্রী লাকি বেগম হয়ে যাবে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসন কর্তৃক উক্ত মর্মান্তিক ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে হামলাকারীদের উপযুক্ত বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানান আহতের বোন সামসুন্নেহার।
এ বিষয়ে আহত শিউলী আক্তারের আপন চাচা হান্নান মিয়া বলেন, “শিউলী আক্তার একা তার ছোট দুই সন্তান নিয়ে ছোট একটি দুচালা টিনের ঘরে বসবাস করে। শিউলী আক্তারকে মারধর করে জায়গাটি দখল করার চেষ্টা করছে লাকি ও তার বাবার বাড়ির লোকজন। দীর্ঘদিন ধরেই লাকি তার বাবার বাড়ির লোকজন নিয়ে শিউলী আক্তারকে অত্যাচার করে আসছে।অসহায় শিউলী আক্তারকে নির্মমভাবে পিটিয়ে আহতের উপর্যুক্ত বিচার দাবি জানাচ্ছি।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শোন লৌহঘরের মেম্বার মোঃ নাজির বলেন,আহত শিউলী আক্তার হাসপাতাল থেকে আসার পর চেয়ারম্যানকে নিয়ে সালিশের মাধ্যমে মীমাংশা করা হবে।
এ বিষয়ে মনিয়ন্দ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন জানান, জায়গা সংক্রান্ত ঝামেলায় উভয় পক্ষের লোকজন আহত হয়েছে। পরবর্তীতে শিউলি আক্তার এর পক্ষে শামসুন্নাহার বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দিলে হেলাল উদ্দিনকে পুলিশ আটক করে নিয়ে যায়। পরে গ্রামবাসীর দায়িত্বে মীমাংসার লক্ষ্যে হেলাল উদ্দিন কে ছাড়ানো হয়।
আখাউড়া থানার এসআই এরশাদ মিয়া জানান, হেলাল উদ্দিনকে আটক করা হয়নি। তাকে থানায় ডাকানো হয়েছে। আহত শিউলীর বোন সামসুন্নেহার অভিযোগ দেওয়ার পর পুলিশ তদন্তে যাওয়ায় জানতে পারেন পারিবারিক কলহে প্রথমে শিউলি ও লাকি আক্তারের সাথে ঝগড়া হয়। পরবর্তীতে লাকি আক্তারের পরিবারের লোকজন শিউলি কে মারধর করে।এ ঘটনায় বাদি মেম্বার চেয়ারম্যান সহ গ্রামের লোকজন দায়িত্ব নিয়ে মিমাংসা করার লক্ষ্যে আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ রসূল আহমেদ নিজামীর কাছে লিখিত আবেদন করেন।যদি মিমাংসা করা না হয় তাহলে আইনি প্রক্রিয়া চলমান থাকবে।
সুন্দর বিচার চাই
যত তারা তারি সম্ভব শিউলি আপা কে সুস্থকরে তুলুন তারপর বিচার হবে
সরাইল উপজেলা আমার বাড়ি
শাহরিয়ার আহাম্মেদ শাকিল