“আলীবাবার জন্ম হয়েছিল চীনে। কিন্তু এটা কোনো চীনা প্রতিষ্ঠান নয়। এর নামটাও কিন্তু চীনা ভাষা থেকে নেওয়া নয়, ১০০১ আরব্য রজনীর গল্প থেকে নামটা নেওয়া। আদতে আলীবাবা হলো চীনে জন্ম নেওয়া একটি প্রতিষ্ঠান, যেটা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা তরুণ ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের এগিয়ে যেতে সাহায্য করে।”
ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা করো না। প্রযুক্তি নিয়েও চিন্তার কিছু নেই। ভবিষ্যৎ নিয়ে বেশি চিন্তিত হওয়া মানে আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি। এর মানে হলো, তোমার ভেতর উদ্ভাবনী চিন্তা কমে যাচ্ছে। হয়তো ভবিষ্যতের সংকটগুলোর কোনো সমাধান আমাদের কাছে নেই। কিন্তু কারও না কারও কাছে তো সমাধান আছেই। আমাদের এই প্রজন্মের কাছে আপাতত সমাধান নেই, তবে আমাদের পরবর্তী তরুণ প্রজন্মের কাছে সমাধান থাকবে। তরুণেরা ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা করেন না, ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন হন বৃদ্ধেরা। ভবিষ্যৎ সব সময় সবার জন্য সম্ভাবনাময়। বিশেষ করে তরুণদের জন্য। কারণ তরুণদের কাছে তো হারানোর কিছু নেই। আমি ১৮ বছর আগে নিজেকে এটাই বুঝিয়েছি এবং ঝুঁকি নিয়েছি। ওই তরুণ বয়সে আমার পয়সা ছিল না, তাই অর্থ হারানোর চিন্তাও ছিল না। আমার কোনো প্রযুক্তি ছিল না, তাই সেদিক থেকেও ক্ষতির আশঙ্কা ছিল না। আমরা শুধু ঠিক করেছিলাম আমরা ভবিষ্যতের জন্য এখন থেকেই প্রস্তুত হব। তাই বলছি, ভবিষ্যৎ নিয়ে ভেবো না, ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত হও। নিজেই নিজের ভবিষ্যৎ বানাও।
আরেকটা বিষয়ও বলতে চাই, অন্যরা যা নিয়ে দুশ্চিন্তা করছে, সেটা নিয়ে তুমি মাথা ঘামিও না। বিশেষ করে, রাষ্ট্রপ্রধান বা প্রধানমন্ত্রীরা যা নিয়ে ভাবছেন, সেটাকে নিজের মাথাব্যথা বানানোর মানে হয় না। তোমার নিজের ভাবনার বিষয়গুলো নিয়ে আগে ভাবো। নিজেকে নিয়ে না ভেবে, পুরো দুনিয়াকে নিয়ে ভাবলে দুনিয়া এগিয়ে যাবে, তুমি আর এগোতে পারবে না। তুমি ভাবো, তুমি কবে গ্র্যাজুয়েট হবে। এরপর কীভাবে জীবন চালাবে। এমন কী করবে, যেটা আর সবার থেকে তোমার পরিচয় আলাদা করে তুলে ধরতে পারবে। কোন কাজে তুমি আনন্দ পাও, আগ্রহ পাও। কীভাবে তোমার কাজ দিয়ে অন্যের সাহায্য হবে—তুমি এসব নিয়ে ভাবো।
তাই আমি শেষমেশ বলছি, ভবিষ্যতের জন্য এখন থেকেই প্রস্তুত হও। আর প্রস্তুত হতে চাইলে অতীতের শিক্ষা নিয়ে এগিয়ো না। আগাও বর্তমান থেকে তুমি যা শিখছ, তা নিয়ে। শুধু যন্ত্রের মতো সব মুখস্ত কোরো না। গড়পড়তা শুধু মুখস্ত করে গেলে তোমার আর যন্ত্রের মধ্যে কোনো পার্থক্য থাকবে না। চেষ্টা করো সৃষ্টিশীল হতে। নিজের উদ্ভাবনী ক্ষমতার পরিচর্যা করো। আরও গঠনমূলক হও।
প্রত্যেক শতকেই এমন একটা প্রতিষ্ঠানের উত্থান হয়, যেটা পুরো শতকের বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে। এদের বলা যেতে পারে ‘কোম্পানি ফর দ্য সেঞ্চুরি’। যেমন মাইক্রোসফট ছিল গত শতকের রূপ বদলে দেওয়া কোম্পানি, আইবিএমও তাই। তাহলে একুশ শতকের কোম্পানি বলতে পারেন আলীবাবা। কারণ এর অনেক উপার্জন।